শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পিরোজপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে শহীদি মার্চ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন পিরোজপুর জেলা শাখার কমিটি অনুমোদন গাছ থেকে আমড়া পাড়তে গিয়ে বিদ্যুতে পুড়ে স্কুলছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু, বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এক হাত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গণভবন হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর। গণ-অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তিতে ড. ইউনূসের বার্তা যৌনকর্মীদের ওপর নির্যাতন বন্ধে ১০ দফা দাবি। সাবেক আইজিপি শহিদুল হক ও আবদুল্লাহ আল মামুন গ্রেফতার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ জনগণের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ অঙ্গিকারাবদ্ধ : আইজিপি পায়রা জনকল্যাণ সোসাইটির পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিবেন – ডঃ ইউনূস

পর্যটন এলাকা কুয়াকাটায় লাখো পর্যটকদের আগমনে হোটেল মোটেলে ভীড়।

  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৫৫ বার পঠিত

মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের ১৮ কিলোমিটার এলাকা এখন লোকারণ্য। দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে পবিত্র শবে মিরাজ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটিকে কেন্দ্র করে দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় লাখো পর্যটকের আগমন ঘটেছে।গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিমে মীরা বাড়ি পর্যন্ত এবং পূর্ব দিকে জাতীয় উদ্যানসংলগ্ন এলাকার বিরাট অংশজুড়ে পর্যটকের আনাগোনা দেখা গেছে।
বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমনে সৈকত ও এর আশপাশের এলাকার পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এ সুযোগে হোটেল-মোটেলে রাতযাপন ও রেস্তোরাঁগুলোতে খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন পর্যটকেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পর্যটকের বাড়তি চাপের কারণে পর্যটকবাহী বাসগুলোকে সৈকত থেকে অন্তত দুই কিলোমিটার দূরে কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের পাশের বিলে তুলাতলী গ্রামে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আজ সকালে কয়েক শ দূরপাল্লার বাস সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বাস থেকে নেমে পর্যটকদের হেঁটে সৈকতসহ পর্যটনকেন্দ্রের হোটেল-মোটেল জোনে যেতে হচ্ছে।
তবে পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতিতে কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট, সীমা বৌদ্ধবিহার, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধবিহার, ইলিশ পার্ক, লেম্বুর চর, শুঁটকিপল্লি, গঙ্গামতী সৈকত, জাতীয় উদ্যানসহ আকর্ষণীয় সব স্পট মুখর। পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই সাগরের জলরাশিতে স্পিডবোট ও ওয়াটারবাইকে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ সাগরের নোনা জলে নেমে গোসল করছেন। অনেকে আবার সৈকতের কিটকটে (ছাতাযুক্ত চেয়ার) বসে একান্তে সময় কাটাচ্ছেন।কেউবা আবার ঘোড়ার পিঠে চরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ আবার সেলফি তুলে সময় পার । পর্যটকদের মধ্যেই অনেকই গঙ্গামতী সৈকত, ফাতরার বন ও আশার চরের দিকে যাচ্ছেন।
সৈকত ও এর আশপাশের বিভিন্ন খাবারের রেস্তোরাঁগুলোতে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। রেস্তোরাঁগুলোতে ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে আছে মাছ। এক দোকানি বলেন, পর্যটক বাড়ায় বিক্রিও বেড়েছে। টুনা ফিশ, কোরাল, চিংড়ি, লবস্টার, রুপচাঁদা বেশি বিক্রি হচ্ছে। মাছভাজা দোকানিদের অনেকেই দিনে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন।
আবাসিক হোটেল খান প্যালেসের স্বত্বাধিকারী মোঃ রাসেল খান বলেন, পর্যটকদের চাপ দেখে আমার হোটেলের প্রতিটি কক্ষই ভাড়া হয়েছে। চাহিদামতো কক্ষ দিতে না পারায় অনেককে ফিরিয়ে দিয়েছি।’
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই মূলত এখানে পর্যটকের আগমনের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়েছে। যে কারণে আবাসিক হোটেল-মোটেলসহ পর্যটনকেন্দ্রিক সবকিছুর ওপর চাপ পড়েছে। গত সপ্তাহে শুক্র ও শনিবারেও প্রচুর ভিড় ছিল। তবে আজকের ভিড়ের মাত্রা কয়েক গুণ বেশি।
ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় বেড়াতে এসেছেন ফরিদ উদ্দিন । তবে তিনি সৈকত এলাকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এর আগেও বহুবার কুয়াকাটায় এসেছি। কিন্তু এবার সৈকতের অবস্থা দেখে হতাশ হয়েছি। সৈকতের বিভিন্ন স্থানে বালুর বস্তা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। এটা তো দেখতে ভালো লাগে না।’
রেস্তোরাঁসহ হোটেল-মোটেলের কক্ষের বাড়তি ভাড়া নিয়েও অনেক পর্যটক অভিযোগ করছেন। কুমিল্লা থেকে আসা জাফর আকন্দ বলেন, এর আগে কুয়াকাটার হোটেলের যে কক্ষের ভাড়া ছিল ২৫০০/ ৩০০০ টাকা, এখন সেই কক্ষের ভাড়া রাখা হচ্ছে ৫০০০ /৫৫০০ টাকা। ভাড়া অতিরিক্ত বাড়ানো হয়েছে। রেস্তোরাঁগুলোতেও খাবার বাড়তি দাম নেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, হোটেল-মোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া, রেস্তোরাঁয় টাটকা খাবার পরিবেশনসহ সবকিছুর বিষয়ে তদারকি করা হচ্ছে। পর্যটকের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে কেউ কেউ খেয়াল-খুশিমতো পণ্যের মূল্য আদায় করার চেষ্টা করছেন। কেউ এ রকম অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকলে এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে কুয়াকাটার প্রবেশমুখ ও এর আশপাশে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে কলাপাড়া হয়ে কুয়াকাটায় প্রবেশের মাত্র একটি সড়ক আছে। এ জন্য একটি সড়কের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। ছুটির দিনসহ বিশেষ দিনে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে গেলে যানজট দেখা দেয়।
বলেন, পর্যটকের এলাকা বাসি বলেন কুয়াকাটা সৈকতে আগমন ঝামেলামুক্ত করতে লতাচাপলী ইউনিয়নের গোড়া আমখোলা পাড়া অথবা মিশ্রিপাড়া থেকে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করতে হবে। এতে পর্যটকেরা সহজেই কুয়াকাটা সৈকতে যেতে পারবেন। এ ছাড়া বাস টার্মিনালের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করা দরকার। এতে দূরপাল্লার পরিবহনসহ পর্যটকবাহী গাড়িগুলো অনায়াসে পার্ক করতে পারবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© All rights reserved © 2022 daily Ajker Songram
Customized By Shakil IT Park