মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:
বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছেনা কাঙ্খিত ইলিশ। হতাশায় দিন কাটছে জেলে পরিবারের। মাঝে মধ্যে দুই একটি ট্রলার অল্প কিছু মাছ পেলেও বেশিরভাগ ট্রলার সমুদ্র থেকে ফিরছে শুন্য হাতে। আড়তগুলোতে নেই আগের মতো কর্মব্যস্ততা। শিববাড়িয়া নদীর দু’পাড়ের মৎস্য বন্দর মহিপুর ও আলীপুর আড়ৎ ঘাটে নোঙ্গর করা রয়েছে শত শত মাছ ধরার ট্রলার। ঘাটে বেকার বসে আছে শ্রমিকরা। কর্মব্যস্ত মৎস্য বন্দরের মানুষগুলো কর্মহীন অবস্থায় সময় পার করছেন। অনেকে পুরানো ছিড়া জাল বুনে সময় পার করছেন । এদিকে দিন দিন ঋণের বোঝাও ভাড়ি হয়ে উঠছে এসব জেলেদের। দিশেহারা হয়ে পরেছে মৎস্য বন্দরখ্যাত মহিপুর-আলিপুরের জেলে পরিবারগুলো।
মৎস্য আড়তে পুরানো জাল বুনছেন বেশ কয়েকজন জেলে। এসময় তাদের সাথে কথা হলে জানান, প্রচন্ড গরমে সাগরে মাছ নেই। বৃষ্টি না হলে সাগরে গিয়ে লাভ নেই। গত দুই মাসে ৫ বার সাগরে গিয়ে শুন্য হাতে ফিরে এসেছেন। প্রতিবারই বাজারের টাকা লোকশান হয়েছে। তাই এখন সাগরে না গিয়ে পুরানো জাল বুনছেন। তবে মাছের দেখা মিললে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাবেন এমনটাই জানিয়েছেন ওই জেলেরা।
মৎস্য শ্রমিক মোঃকাওছার বলেন, গত দুই মাস ধরে মাছ খুবই কম। ট্রলার ঘাটে আসলে কাজ থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময় অলস থাকতে হয়। আয় কম, সংসার চালাতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।
মৎস্য আড়ৎ মালিক আবু জাফর হাওলাদার বলেন, সমুদ্রে মাছ কম। বাজার সদায় করে ট্রলার সাগরে পাঠাই, ফিশিং শেষে শুন্য হাতে ফিরে আসে। গত মাসে আমার আট লাখ টাকা লোকশান হয়েছে।
আলীপুরের মৎস্য ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, ব্যবসার অবস্থা ভালো না। অন্য ব্যবসার চিন্তা করছি। তিনি আরও বলেন, যে হারে বৈধ-অবৈধ ট্রলিং সমুদ্রে মাছ শিকার করছে, তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মাছই থাকবে না। ট্রলিং জালে সমস্ত মাছের পোনা মারা যাচ্ছে। আমাদের সমুদ্রের মৎস্য সম্পদ রক্ষা করতে হলে অবৈধ ট্রলিং জাল বন্ধ করতে হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ইলিশ মাছ হচ্ছে গভীর সমুদ্রের মাছ। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রচন্ড গরম, অনাবৃষ্টির কারণে মাছ কম পানিতে আসছে না। তাই কুয়াকাটার উপকূলে কম ইলিশ ধরা পরছে। আশা করছি আবহাওয়া পরিবর্তন হলে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পরবে।